আট দফা দাবি সহ স্মারকলিপি প্রদান করল বুগড়ী দিসম মাঃ মড়ে কমিটি। সম্প্রতি মাননীয় বন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে একটি স্মারকলিপি প্রদান করল। বুগড়ী দিসম জাহের থান সংলগ্ন এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক দাবি দাওয়া নিয়ে আট দফা দাবি পত্র তুলে দেওয়া হয়। স্মারকলিপিটি চন্দ্রকোনা রোডের বুগড়ী দিসম মাঃ মড়ে কমিটির কনভেনার শিবুলাল মুর্ম্মূ’র নেতৃত্বে, মন্ত্রী মহাশয়ের বাসভবনে তাঁর অফিসে গিয়ে হাতে তুলে দেওয়া হয়। বুগড়ী মুলুকের জনগণের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এলাকার সার্বিক উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। এই স্মারকলিপির মাধ্যমে বিশেষত বুগড়ী দিশম জাহের থান এলাকায় বনভূমির উপর অবস্থিত ধর্মীয় উপাসনালয়গুলির জন্য রাজ্য সরকারের কাছে কমিউনিটি পাট্টা প্রদানের দাবি জানানো হয়। শিবুলাল মুর্ম্মূ বলেন, "বুগড়ী দিশম জাহের থান এর সাথে সাথে এলাকার বেশিরভাগ ধর্মীয় স্থান বনভূমির উপর অবস্থিত। এইসব স্থানকে খাস জমি হিসেবে রূপান্তরিত করে আমাদের জাঁহের থানের নামে পাট্টা প্রদান করা হোক।"এছাড়া, স্মারকলিপিতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের দাবিও উঠেছে। এর মধ্যে বুগড়ী দিশম জাহের থান এলাকায় দুটি হাই মাস্ট লাইট স্থাপন, একটি স্থায়ী সাংস্কৃতিক মঞ্চ নির্মাণ, চারপাশে দুটি প্রবেশদ্বারসহ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, সাঁওতাল বিদ্রোহ ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদ সিদু ও কানহুদের মূর্তি স্থাপন এবং সম্প্রতি নির্মিত চন্দ্রকোনা রোডের দুটি ওভার ব্রিজের মধ্যে একটি ব্রিজের নামকরণ স্বাধীনতা সংগ্রামী বাবা তিলকৌ মুর্ম্মূ (মাঝি) এর নামে করার দাবি করা হয়েছে। এছাড়া, বুগড়ী দিশম জাহের থান সংলগ্ন পতিত জমির উপর একটি আদিবাসী মার্কেট নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা আদিবাসী জনগণের জন্য ব্যবসার নতুন সুযোগ তৈরি করবে এবং তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও স্থানীয় হস্তশিল্পের প্রচার করতে সহায়ক হবে। শিবুলাল মুর্ম্মূ বলেন, "এই মার্কেটটি আমাদের আদিবাসী জনগণের জন্য বড় ধরনের অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়ে আসবে এবং আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে নতুন করে পরিচিতি দেবে।" এইসব উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্য আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি ছিল একটি অডিটোরিয়াম হল এবং কমিউনিটি ওয়াশরুম নির্মাণের জন্য, যা জনগণের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত হবে।
শিবুলাল মুর্ম্মূ কে বেশ কিছু নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "যেহেতু অন্যান্য ধর্মীয় স্থান, শশ্মান বা মন্দির-মসজিদ নির্মাণে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হলে, তখন সরকারের তরফ থেকে উন্নয়নমূলক কাজগুলো দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু আদিবাসীদের উন্নয়ন কাজগুলি আইনি জটিলতার অজুহাতে আটকে রাখা হচ্ছে। আমরা এই অবস্থার বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে প্রস্তুত বলে এটাও জানাই।" এদিন বুগড়ী দিশম মাঃ মড়ে কমিটির সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পারগানা বাবা মনোরঞ্জন মুর্ম্মূ, ধীরেন সরেন, রবিলাল সরেন, শীতল হাঁসদা, দশরথ সরেন এবং মঙ্গল মান্ডি। এদিন স্মারকলিপি গ্রহণ করার পর বন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা জানান উল্লিখিত আলোচ্য বিষয়গুলির উপর অনার পক্ষ থেকে যতটুকু পদক্ষেপ গ্রহণ করার উনি বিভাগীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।"

No comments:
Post a Comment